কার্যপদ্ধতি
শিশুশিক্ষার গোড়ার কথা―মানুষের প্রকৃতি-প্রদত্ত স্বাভাবিক কৌতূহল, সৃজনশীলতা রক্ষার লক্ষ্যে―জানা থেকে অজানা, চেনা থেকে অচেনা কিংবা মূর্ত থেকে বিমূর্ত জগতে প্রবেশ। নালন্দার শিক্ষাকর্মীরা শিশুবান্ধব ব্যক্তিত্বের অধিকারী, শিশুর সঙ্গ উপভোগ করেন, সকল শিশুসুলভ আচরণে প্রশ্রয় দেন সহজাত স্বভাবে। যে-কোনো বিষয় সম্পর্কে বড়রা ব্যাখ্যা না করে, সম্পূর্ণ তথ্য না জানিয়ে শিশুদের কৌতূহল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকেন। দলগত ও ব্যক্তিগত ভ্রমণ, ভ্রমণের সময় দর্শনীয় স্থান, প্রাকৃতিক প্রতিটি অনুষঙ্গ সম্পর্কে জানার, বিশেষত প্রকৃতির উপাদান এবং তা ধ্বংসের ফলে ক্ষতিকর প্রভাবের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত।
অক্ষরজ্ঞান দিয়ে ভাষা শিক্ষার পরিবর্তে নালন্দায় ভাষাশিক্ষা শুরু হয় সাহিত্যের মাধ্যমে শিশুর চেনা জিনিস থেকে এবং রঙিন ও আকর্ষণীয় ছবি সংবলিত গল্পের বইয়ের মাধ্যমে। প্রতি নয়জন শিশুর জন্য একজন শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। শিশুকে নিজের মতো কাজ করতে দেয়া নালন্দার শিক্ষানীতির অন্যতম প্রধান দিক। শিশুর জন্য গৃহশিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন নেই। পরিবারের কেউ শিশুকে পড়াতে চাইলে নালন্দার শিক্ষাপদ্ধতি তাঁর জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বিদ্যালয় ও বাড়ি একে অপরের পরিপূরক নয় তবে উভয়ের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ।
গতানুগতিক ধারার পরীক্ষা পদ্ধতিতে বিশ্বাসী নয় নালন্দা। সকল শ্রেণিতেই প্রতিদিনের কাজের ভিত্তিতে শিশুদের মূল্যায়ন করা হয়। রাত জেগে পড়া মুখস্থ করে বিশেষ দিনে পরীক্ষাপত্রে ঢেলে-দেওয়া উত্তরপত্র দেখে ছাত্র মূল্যায়ন অবৈজ্ঞানিক ও শিশুর বিকাশের পথে বাধা বলে মনে করে নালন্দা।